Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৪ এপ্রিল ২০২৩

জিওডেটিক পরিসেবা

 

জিওডেটিক ডিটাচমেন্ট (জিওডেসি)

 

জিওডেসি হলো নেভিগেশন, ভূ-তাত্তিক, ভূ-বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল বিজ্ঞানের একটি অংশ। এটি জাতীয় অর্থনীতি বিনির্মাণ,    ভূ-বিজ্ঞান গবেষণা এবং সামাজিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি, জিওডেসিকে একটি যুগান্তকারী রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। ঐতিহ্যগত শাস্ত্রীয় জিওডেসির সাময়িক এবং স্থানিক সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে এটি আধুনিক জিওডেসির উন্নয়নে একটি নতুন ধারায় প্রবেশ করেছে। জিওডেসিতে জ্যামিতিক জরিপ এবং মানচিত্র প্রণয়নসহ পৃথিবীর পৃষ্ঠের সমস্ত ধরন অধ্যয়ন করা হয়। জিওডেসিতে পৃথিবীর আকার-আকৃতি, মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্র অধ্যয়ন এবং পরিমাপ করা হয়।

 

পৃথিবীর পৃষ্ঠে একটি সার্বভৌম বিন্দুর সঠিক জ্যামিতিক অবস্থান দেখানোর জন্য একটি ইউনিফাইড কো-অর্ডিনেট সিস্টেম স্থাপন করা প্রয়োজন। এজন্য জিওডেটিক পরিমাপ  টপোগ্রাফিক ম্যাপিংয়ের আগে করা প্রয়োজন হয়। জিওডেসি সূক্ষ নির্ভুলতা এবং রেজোলিউশন সহ তাৎক্ষণিক, গতিশীল এবং পরিমাণগত ভূ-স্থানিক এবং বাস্তব তথ্য সরবরাহ করে। এটি পৃথিবীর ঘূর্ণন, মাধ্যাকর্ষণ, জোয়ার, ভূত্বকের গতিবিধি এবং সমুদ্র পৃষ্ঠের পরিবর্তনগুলির মতো ভূ-গতিবিদ্যা সম্পর্কিত ঘটনা অধ্যয়নের একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

 

জিওডেটিক ডিটাচমেন্ট, বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর (এসওবি) এর একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। এটি প্রথম থেকেই সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাকে জিওডেটিক সেবা প্রদান করে আসছে এবং জাতীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নে অবদান রাখছে। 

 

 

জিওডেটিক ডিটাচমেন্ট এর দ্বায়িত্ব/ কার্যাবলীঃ

 

  • ঢাকার গুলশানে জাতীয় অনুভূমিক ও ভার্টিকেল ডেটাম; চট্রগ্রামের রাঙ্গাদিয়ায় টাইডাল পর্যবেক্ষণাগার এবং ঢাকা, চট্রগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, মৌলভীবাজার ও রংপুরসহ ০৬ (ছয়) টি স্থায়ী জিএনএসএস কোর্স রক্ষাণাবেক্ষণ করা। 
  • সারা দেশে জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্ট (হরাইজন্টাল (ট্রাভার্স, ট্রায়াঙ্গুলেশন এবং গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম দ্বারা) এবং ভার্টিকেল (অত্যন্ত নিখুঁত লেভেলিং দ্বারা)) স্থাপন এবং সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা।
  • জোয়ার-ভাটা পর্যবেক্ষণ, গড় সমুদ্র সমতল (এমএসএল) নির্ণয় এবং রক্ষাণাবেক্ষণ করা। 
  • জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্ট ডাটা এবং গড় সমুদ্র সমতল ডাটা সংরক্ষণ এবং চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যবহারকারীদের কাছে সরবরাহ করা।
  • চাহিদা অনুযায়ী বিভাগীয় এবং বহি:বিভাগীয় গ্রাউন্ড কন্ট্রোল জরিপ কাজ পরিচালনা করা।
  • কোন বড় পরিবর্তন ঘটলে পুনরায় জরিপ করে জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্ট সমূহ হালনাগাত করা।
  • বাংলাদেশের জিওয়েড মডেল এবং জিওয়েড মানচিত্র প্রস্তুত করা।

 

 

বাংলাদেশের জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্ট সমূহঃ

 

জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্টসমূহ সমূহ টপোগ্রাফিক ম্যাপিং, নেভিগেশন এবং প্রকৌশল সম্পর্কিত কাজগুলির নির্ভুলতা এবং নির্ভরযোগ্যতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসওবির জিওডেটিক ডিটাচমেন্ট, গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) এবং লেভেলিং প্রযুক্তির মাধ্যমে সারা দেশে জিওডেটিক কন্ট্রোল নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করেছে।

 

 

জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্টের তালিকাঃ

  • ত্রি-মাত্রিক কন্ট্রোল পয়েন্ট সমূহ (অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ, গড় সমুদ্র সমতল হতে উচ্চতা)
  • ৮৪৩
  • দ্বি-মাত্রিক কন্ট্রোল পয়েন্ট সমূহ  (অক্ষাংশ, দ্রাঘিমাংশ)
  • ২৭০
  • এক-মাত্রিক কন্ট্রোল পয়েন্ট সমূহ (এমএসএলের উপরে উচ্চতা)
  • ১৪৮৩
  • মোট হরাইজন্টাল কন্ট্রোল পয়েন্টসমূহ
  • ১১১৩
  • মোট ভার্টিকেল কন্ট্রোল পয়েন্টসমূহ
  • ২৩২৬
  • মোট জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্টসমূহ
  • ২৫৯৬
 

 

অনলাইনে জিওডেটিক ডাটা সার্ভিসঃ

 

 

  • জিওডেটিক ডিটাচমেন্ট অনলাইনে জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্টের ডাটা প্রদান করে। কন্ট্রোল পয়েন্টের ম্যাপ দেখতে  https://202.40.182.219/webservice/

  • কন্ট্রোল পয়েন্টের এক্সেস পেতে ব্যবহারকারীদের নিবন্ধন করতে হবে এবং পেমেন্ট করতে হবে। নিবন্ধন করতে https://data.sob.gov.bd/
  • জিএনএসএস-কোর্স ডাটার এক্সেস পেতে ব্যবহারকারীদের http://202.40.181.3/  ওয়েবসাইট ভিজিট করে নিবন্ধন করতে হবে।  

 

 

 

সম্পূর্ণ জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্ট এলাকা

  

 

 

আংশিক জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্ট এলাকা

 

 

 

জিওডেটিক জরিপের কৌশলসমূহঃ

 

  • ট্রানজিটের মাধ্যমে ট্রায়াঙ্গুলেশন করা

 

  • ইডিএম (ইলেকট্রনিক ডিসটেন্স মেজারিং ইন্সট্রুমেন্ট)-এর মাধ্যমে ট্রাইলেটারেশন করা

 

  • টোটাল স্টেশনের (ট্রানসিট এবং ইডিএম) এর মাধ্যমে ট্রাভার্সিং করা

 

  • লেভেল মেশিন দ্বারা লেভেলিং করা

 

  • জিপিএস জরিপের মাধ্যমে বেইসলাইন পরিমাপ করা

 

 

 জিওডেটিক সার্ভে করার জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জাম/যন্ত্রপাতিঃ

  • জিএনএসএস রিসিভার
  • আরটিকে জিএনএসএস রিসিভার
  • হ্যান্ডহেল্ড জিপিএস রিসিভার
  • টোটাল স্টেশন
  • ডিজিটাল থিওডোলাইট
  • অ্যানালগ থিওডোলাইট
  • ডিজিটাল লেভেল
  • অ্যানালগ লেভেল
  • মোবাইল ম্যাপার
  • ডাটা সেন্টার (সার্ভার) ডাটা

 

 

বাংলদেশের অনুভূমিক ডেটাম নির্ণয়ঃ

 

১৯৯০ সালের আগে গুলশান, ঢাকায় একটি জিওডেটিক কন্ট্রোল পয়েন্ট অস্থায়ী হরাইজন্টাল ডেটাম হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছিল, কিন্তু এর স্থানাঙ্কগুলির নির্ভুলতা যাচাই করা হয়নি, যার স্থানাঙ্ক ছিল এভারেস্ট-১৮৩০ এর সাপেক্ষে । যেহেতু জিপিএস ডব্লিউজিএস-৮৪ কো-অর্ডিনেট সিস্টেমে স্থানাংক দেয় তাই বাংলাদেশের কন্ট্রোল পয়েন্টগুলি এভারেস্ট-১৮৩০ কো-অর্ডিনেট এর সাপেক্ষে উপযুক্ত ছিলনা। ফলে ১৯৯৪ সালে গুলশান-এ পুরাতন কন্ট্রোল পয়েন্টটি সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের জিওডেটিক হরাইজন্টাল ডেটাম প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এর স্থানাঙ্ক, চারটি আইজিএস স্টেশন ওয়েটজেল (জার্মানি), হার্টবেইসথোক (দক্ষিণ আফ্রিকা), ইয়ারাগেডি (অস্ট্রেলিইয়া) এবং সুকুবা (জাপান) এর সাপেক্ষে টানা ০৭ দিন জিপিএস পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ডব্লিউজিএস-৮৪ কো-অর্ডিনেট সিস্টেমে নির্ণয় করা হয়।

 

এই ০৪ (চার) টি স্টেশন কেবল মাত্র ইন্টারন্যাশনাল জিএনএসএস সার্ভিস (আইজিএস) এর জন্য কন্টিনিউয়াসলি  জিপিএস পর্যবেক্ষণ স্টেশন হিসাবেই কাজ করছে না, বরং ইহা ভেরী লং বেইসলাইন ইন্টারফেরোমেট্রি (ভিএলবিআই) সাইট অথবা স্যাটেলাইট লেজার রেঞ্জিং (এসএলআর) সাইট হিসাবেও কাজ করছে। ভিএলবিআই এবং এসএলআর সবচেয়ে সূক্ষ্মতম গ্লোবাল জিওডেটিক পর্যবেক্ষণ কৌশল, যা কয়েক মিলিমিটার সঠিকতার মধ্যে স্থানাঙ্ক নির্ণয় করে এবং বিশ্বব্যাপী জিওডেটিক রেফারেন্স সিস্টেম বজায় রেখে পরিচালনা করে। এর ফলে, এই স্টেশনগুলির স্থানাঙ্ক সবচেয়ে সঠিকভাবে নির্ণয় করা হয়।  ১৯৯৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর হতে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা ০৭ (সাত) দিনের জিপিএস পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং এই ডাটা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি; ক্যালিফোর্নিয়া ও হাভার্ড বিশ্যবিদ্যালয়ের GAMIT Baseline  বিশ্লেষণ  সফট্ওয়্যার এবং GLOBK Network Adjustment  সফট্ওয়্যার ব্যবহার করে জিওডেটিক ডিপার্টমেন্ট, জিএসআই, জাপান কর্তৃক প্রসেস করে ডেটামের মান নির্ণয় করা হয়।

 

জাতীয় অনুভূমিক ডেটাম স্থাপন

 

অন্যদিকে, প্রথম শ্রেণীর কন্ট্রোল পয়েন্ট জরিপের জন্য এভারেস্ট-১৮৩০ এর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্থানাঙ্কগুলি জিপিএস ডাটা ব্যবহার করে পরীক্ষা করা হয়েছিল। জিপিএস নেটওয়ার্কে ২৪ (চব্বিশ)টি বিদ্যমান পুরনো পিলার অন্তর্ভুক্ত ছিল, যাদের স্থানাঙ্ক এভারেস্ট-১৮৩০ কো-অর্ডিনেট সিস্টেমে ছিল। পুরনো স্থানাঙ্কগুলির নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করার জন্য ২৪ (চব্বিশ) টি পুরনো পিলারের মধ্যে ১৯ (ঊনিশ) টি পিলার ব্যবহার করে ফ্রি নেটওয়ার্ক সমন্বয় কৌশল দ্বারা নেটওয়ার্কটি সমন্বয় করা হয়েছিল। ফলস্বরূপ, এই সমন্বয়ের স্থানাঙ্কগুলি "পুরাতন" এভারেস্ট -১৮৩০ স্থানাঙ্ক হিসেবে গৃহীত হয়েছিল।